নিজস্ব প্রতিবেদন, ঝাড়গ্রাম: বয়স্ক জনিত কারনে আর সেভাবে হাঁটা চালা করতে পারছে না রামলাল। যার ফলে তাকে এখন প্রায়শই দেখা যায় জঙ্গলের ভেতরে বসে থাকতে কিংবা ঘোরাফেরা করতে। শান্ত স্বভাবের খুঁড়ো হাতিটিকে বন দফতরের তরফ থেকেই রামলাল নাম দেওয়া হয়েছিল। এদিকে ঝাড়্গ্রাম (Jhargram) জেলার বেশ কিছু এলাকা যেখানে কার্যত তিতবিরক্ত হাতিদের হানায়, সেখানে রামলাল (Ramlal) শান্ত স্বাভাবের হওয়ায় গ্রামবাসীদের মতোই সেও এখন তিতবিরক্ত সাধারণ মানুষের ওপর। তপবনে
এলাকার মানুষরা হাতিদের গ্রামে হানা দেওয়ার মতোই বয়স্ক রামলালকে উত্ত্যক্ত করে চলেছে প্রতিনিয়ত। যা ক্রমশ দুশ্চিন্তায় ফেলছে বনাধিকারিকদের। সেক্ষেত্রে তারা বর্তমানে এহেন সিদ্ধান্তে এসে পৌঁছেছেন যে, হাতিটিকে সাধারণ মানুষের হাত থেকে রেহাই দিতে তপোবনে পাঠানো হবে। যেখানে শান্ত রামলালকে আর কেও উত্ত্যক্ত করতে পারবে না এবং সে শান্তিতে থাকতে পারবে।
তপবনে চললেন খুঁড়ো রামলাল বাবু
হাতিটিকে সাধারণ মানুষের হাত থেকে রেহাই দিতে এবং যাতে রামলালকে আর কেও উত্ত্যক্ত করতে না পারে তার জন্য ঝাড়গ্রাম (Jhargram) জেলার ওড়িশা সীমান্তবর্তী নয়াগ্রামের তপোবনের গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসার সিধান্ত ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে বনদফতর আধিকারিদের মারফত। গভীর জঙ্গলে থাকলে মানুষ আর তাঁকে বিরক্ত কিংবা উত্ত্যক্ত কিছুই করতে পারবে না।
রামলাল দীর্ঘদিন ধরে ঝাড়গ্রাম (Jhargram Block) ব্লকের শালবনী (Salboni), বরিয়া (Bariya), শিরশি (Sirshi), আমলাচটি Am (Amlachoti), জিতুশোল (Jitushol), বিকাশভারতী (Bikashbarati), ঘৃতখাম, নেদাবহড়া, পুকুরিয়া (Pukuriya) এলাকায় ঘোরাঘুরি করত। কিন্তু সে দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্ত এলাকা গুলিতে ঘোরাফেরা করলেও সাধারণ মানুষের কোনও ক্ষতি সে কখনোই করেনি।
যার জন্য এলাকার মানুষ হাতিটির (Elephant) একেবারে সামনে গিয়ে গায়ে হাত দিয়ে, লেজ ধরে উত্ত্যক্ত করার সাহস পেতেন। এ ঘটনা কেবল একদিনের নয়, বনদফতর সূত্রের খবর প্রতিদিন রামলালকে এমনসব অসুবিধার সম্মুখীন হতে হতো। কিন্তু তাতেই বা কী? উত্ত্যক্ত করা হলেও সাধারণ মানুষের কোনো ক্ষতি কখনোই করেনি শান্ত স্বাভাবের রামলাল। হাতিটি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলত বলে স্থানীয় মানুষজনেদের কাছে খুঁড়ো হাতি নামেও পরিচিত ছিল সে।
তবে বনদফতর নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, হাতিটি যেহেতু শান্ত স্বাভাবের তাই এলাকার মানুষজনেরা যদি তাঁকে এভাবেই ক্রমাগত উত্ত্যক্ত করে চলে দুর্ঘটনা যেকোনো সময়েই ঘটতে পারে। এভাবেই তাকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করা হলে, কিংবা আঘাত দেওয়ার চেষ্টা করলে যে কোনো মুহুর্তে রেগে গিয়ে কোনো বড়সর দুর্ঘটনাও ঘটাতে পারে সে। তাই মানুষ যাতে হাতিটিকে আর উত্ত্যক্ত করতে না পারে, তার জন্যই তপোবনের (Tapabon) গভীর জঙ্গলে রামপালকে (Ramlal) আপতত ছেড়ে দেওয়া হবে।
Read More – ঝাড়গ্রামে লকডাউন
এবিষয়ে ঝাড়্গ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেন (Birbaha Hasda),” মানুষ যাতে হাতিটিকে উত্ত্যক্ত করতে না পারে এবং কোনওপ্রকার বড়সড় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে না হয় সাধারণ মানুষকে তাই, নয়গ্রামের (Nayagram) তপোবনের গভীর জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাতিটিকে। ওখানে হাতি শান্তিভাবে থাকতে পারবে।”