নিজস্ব প্রতিবেদন, ঝাড়গ্রাম
সাত সমুদ্র পেরিয়ে আমেরিকার বোমারু বিমান বাহিনী ঘাঁটি গেড়ে ছিল এই বাংলায়। কলকাতায়? না, সেখানে নয়। সেখান থেকে প্রায় ১৭৫ কিলোমিটার দূরে ঝাড়গ্রামে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতি জড়িয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে দুধকুন্ডি এয়ারফিল্ড।
বালিভাসা হল ঝাড়গ্রাম জেলার জেলার গুপ্তমণি থেকে ২ কিলোমিটার দূরে। সেখান থেকে আরও খানিক এগোলে ফাঁকা ধুধু জমি কংক্রিটের তৈরি বিশাল এলাকা। দেখে বোঝা যাবে যে জমিটা এখন অব্যবহৃত। তবে একটা সময় এই জায়গা গমগম করতো প্লেনের শব্দে বা সেনাদের বুটের আওয়াজে। এটি বাংলায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জীবন্ত নিদর্শন৷
এই এয়ারফিল্ড ঝাড়গ্রাম থেকে প্রায় ১৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ১৯৪২ সালে এটি তৈরি হয়। তার আগে এই জায়গাটি ছিল জঙ্গল। সেই সব পরিষ্কার করে এই এয়ারফিল্ড তৈরি হয়। তবে এই এয়ারফিল্ড ছিল মার্কিন বিমানবাহিনীর৷ ব্রিটিশদের নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন বোমারু বিমান এখান থেকেই যুদ্ধের জন্য জাপান-মায়ানমার-থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশের উদ্দেশ্যে উড়েছিল। ১৯৪৪ সালে মার্কিন বিমানবাহিনীর ৪৪৪ বোম্বার্ডমেন্ট স্কোয়াড এখান থেকেই মায়ানমারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এছাড়া আরও অনেক অভিযানই এখান থেকে হয়েছিল। দুধকুন্ডি ছাড়া আরও বেশকিছু এয়ার ফিল্ড এখানে তৈরি করা হয়েছিল।
১৯৫৪ সাল পর্যন্ত বাহিনীর বিমান উড়তো। কিন্তু ১৯৪৬ থেকে দুধকুন্ডি এয়ারফিল্ড আর ব্যবহৃত হয় না। ফলে অনেকটা নষ্ট হয়ে গেলেও রানওয়ে কিছুটা এখনও অবশিষ্ট আছে। এখানকার কিছু অংশে কলাইকুন্ডা এয়ার ফোর্স স্টেশনের তত্ত্বাবধানে ফায়ারিং প্র্যাকটিস করা হয়। এ ভাবেই পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম নিদর্শন। পরিত্যক্ত হলেও আজও এই এয়ারফিল্ড পশ্চিমবঙ্গের একটি হেরিটেজ স্পট। ঝাড়খণ্ডের অন্যতম টুরিস্ট স্পট হয়ে উঠছে এই স্থানটি।